বাংলাদেশে রাতের বেলা ভোট গ্রহণের সুযোগ নেই: সিইসি

নির্বাচন কমিশন

বাংলাদেশের প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) জানালেন, আগামী নির্বাচনে রাতের বেলা ভোট গ্রহণের কোনও সম্ভাবনা নেই। বিস্তারিত জানুন নির্বাচন কমিশনের মতামত নিয়ে। ছবি: সংগ্রহ

রাতের বেলা ভোট গ্রহণের সম্ভাবনা নেই: সিইসি

বাংলাদেশের প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, আগামী জাতীয় নির্বাচনে রাতের বেলা ভোট গ্রহণের কোনও সুযোগ নেই। নির্বাচন প্রক্রিয়ায় দিনরাতের কোনো পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে না বলে তিনি স্পষ্টভাবে মন্তব্য করেছেন। সিইসি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন সবসময় নিরপেক্ষভাবে ও স্বচ্ছভাবে ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া পরিচালনা করবে।

এ বক্তব্যটি এমন এক সময়ে এসেছে যখন বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং বিশ্লেষকরা রাতে ভোট গ্রহণের সম্ভাবনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন। তাদের ধারণা ছিল, যদি কোনো কারণে ভোট গ্রহণ রাতের সময় হয়, তবে এটি ভোটারদের জন্য অসুবিধাজনক হতে পারে এবং নির্বাচন নিয়ে সংশয় তৈরি হতে পারে।

নির্বাচন কমিশনের অবস্থান

সিইসি কেএম নূরুল হুদা জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে এবং তারা নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধভাবে অনুষ্ঠিত করার জন্য সচেষ্ট থাকবে। তার মতে, নির্বাচন কমিশনের কাজ হচ্ছে ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং নির্বাচন প্রক্রিয়া সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলা।

নির্বাচন কমিশন মেনে চলছে প্রথাগত সময়সূচি, যেখানে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ হবে। এটি কার্যকরভাবে ভোটারদের ভোট দেওয়ার সুযোগ তৈরি করবে এবং সব দিক থেকে একটি সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করবে।

নির্বাচন প্রসঙ্গে রাজনৈতিক মতামত

বিএনপি এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলোর পক্ষ থেকে কিছুটা সন্দেহপ্রকাশ করা হয়েছে নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রম নিয়ে। তাদের মতে, সরকার সম্ভবত নির্বাচনে প্রভাব খাটাতে চায় এবং সেজন্য ভোট গ্রহণের সময় কিংবা প্রক্রিয়ায় কিছু পরিবর্তন আনতে পারে। তবে সিইসি স্পষ্ট করে জানিয়েছেন যে, নির্বাচনের সুষ্ঠুতা নিয়ে কোনো রকম আপস করা হবে না এবং ভোট গ্রহণের সময় কিংবা পদ্ধতি নিয়ে কোনো পরিবর্তন হবে না।

সিইসি আরও বলেন, নির্বাচনের সময় বা পদ্ধতি নিয়ে যেকোনো রকম সংশয় বা উদ্বেগ থাকলে তা নির্বাচন কমিশনের কাছে জানানোর জন্য জনগণকে আহ্বান করা হয়েছে।

সিইসি

ছবি: যোগান নিউস

নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি

নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে বিভিন্ন জেলাগুলোর নির্বাচনী কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। সিইসি জানিয়েছেন, নির্বাচনের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে এবং নির্বাচনকালীন সময় তাদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হবে।

তারা ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে সঠিকভাবে ভোটিং মেশিন এবং অন্যান্য প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে ভোটদানের প্রক্রিয়াকে আরো স্বচ্ছ এবং নিরাপদ করতে কাজ করছে।

রাতের বেলা ভোটের সমস্যা

নির্বাচন কমিশন এবং সরকারের পক্ষ থেকে বারবার নিশ্চিত করা হলেও, কিছু রাজনৈতিক দল এবং নাগরিক সমাজের সদস্যরা রাতের বেলা ভোট গ্রহণের বিপক্ষে নিজেদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা মনে করছেন, রাতের ভোটের কারণে ভোটারদের জন্য নিরাপত্তার সমস্যা তৈরি হতে পারে এবং এটি নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে।

সিইসি যদিও বলেছেন, রাতের ভোটের প্রস্তাবনা বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়, তবে তিনি জানিয়েছেন যে নির্বাচন কমিশন ভোটারদের স্বার্থে সবধরনের ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত।

ভবিষ্যত পরিকল্পনা ও নির্বাচনের গুরুত্ব

বাংলাদেশের ২০২৫ সালের নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। এটি শুধু দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য নয়, বরং দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নির্ধারণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সিইসি এবং নির্বাচন কমিশন সব ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত, যাতে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।

নির্বাচন কমিশনের পক্ষে সর্বশেষ বক্তব্যটি আশাব্যঞ্জক, যেখানে তারা ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন। জনগণ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে স্বচ্ছতা এবং আস্থা গড়ে তোলার জন্য কমিশন সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *