ব্রিটিশ এমপি তুলিপ সিদ্দিককে দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের তলব

বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ব্রিটিশ এমপি তুলিপ সিদ্দিককে গুলশানে একটি ফ্ল্যাট অবৈধভাবে গ্রহণের অভিযোগে তলব করেছে। বিস্তারিত জানুন। ছবি: দায়ী অবসাবের
দুদকের তলব: ব্রিটিশ এমপি তুলিপ সিদ্দিককে জিজ্ঞাসাবাদে আহ্বান
বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ব্রিটিশ লেবার পার্টির এমপি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি তুলিপ সিদ্দিককে তলব করেছে। অভিযোগ উঠেছে, তিনি ঢাকার গুলশানে ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট বিনামূল্যে গ্রহণ করেছেন। দুদক সূত্রে জানা গেছে, তাকে ১৪ মে সকাল ১০টায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির হতে বলা হয়েছে।
মামলার পটভূমি: গুলশানের ফ্ল্যাটের অবৈধ হস্তান্তর
দুদকের অভিযোগ অনুযায়ী, ১৯৬৩ সালে বিচারপতি ইমাম হোসেন চৌধুরী গুলশানে একটি প্লট বরাদ্দ পান, যা ৯৯ বছরের জন্য লিজ ছিল। ১৯৭৩ সালে তিনি মো. মুজিবুর রহমান ভূঁইয়ার কাছে পাওয়ার অব অ্যাটর্নির মাধ্যমে প্লটটি হস্তান্তর করেন। পরবর্তীতে প্লটটি বিভক্ত হয়ে ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের মাধ্যমে বিক্রি হয়। তবে রাজউকের নথি অনুযায়ী, লিজ মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে প্লটটি হস্তান্তর করা অবৈধ ছিল।
অভিযোগের বিবরণ: অবৈধ প্রভাব ও বিনামূল্যে ফ্ল্যাট গ্রহণ
দুদকের মামলায় বলা হয়েছে, তুলিপ সিদ্দিক রাজউকের কিছু কর্মকর্তার সঙ্গে যোগসাজশে ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের পক্ষে অবৈধভাবে ফ্ল্যাট হস্তান্তরের অনুমোদন দেন। এর বিনিময়ে তিনি গুলশানের একটি ফ্ল্যাট বিনামূল্যে গ্রহণ করেন, যা দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের আওতায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
অন্যান্য অভিযুক্ত: রাজউকের সাবেক আইন উপদেষ্টা
এই মামলায় আরও দুইজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে—রাজউকের সাবেক সহকারী আইন উপদেষ্টা শাহ মো. খসরুজ্জামান ও সরদার মোশাররফ হোসেন। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা লিজ চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডকে ফ্ল্যাট হস্তান্তরের অনুমোদন দেন।

ছবি: বাংলাদেশ প্রতিদিন
তুলিপ সিদ্দিকের প্রতিক্রিয়া: অভিযোগ অস্বীকার
তুলিপ সিদ্দিক এই অভিযোগগুলোকে “মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত” বলে অভিহিত করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, দুদক তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেনি এবং তার আইনজীবীরা বিষয়টি নিয়ে দুদকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছেন, কিন্তু কোনো সাড়া পাননি।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া: যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক মহলে উদ্বেগ
এই ঘটনায় যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক মহলে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। লেবার পার্টির নেতা স্যার কেয়ার স্টারমার তুলিপ সিদ্দিকের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, তবে বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টি তার পদত্যাগ দাবি করেছে। তুলিপ সিদ্দিক এর আগে যুক্তরাজ্যের ট্রেজারি মন্ত্রণালয়ে সিটি মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন।
ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ: মামলার অগ্রগতি
দুদক জানিয়েছে, তুলিপ সিদ্দিক যদি নির্ধারিত তারিখে হাজির না হন, তবে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন এবং প্রমাণাদি সংগ্রহের কাজ চলছে।