গাজায় যুদ্ধাপরাধ করেছে ইসরায়েল, সন্দেহ নেই: ম্যাথিউ মিলার

যুদ্ধাপরাধ গাজা

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার স্পষ্টভাবে বলেছেন, গাজায় ইসরায়েল যে যুদ্ধাপরাধ করেছে তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। এই মন্তব্য আন্তর্জাতিক পরিসরে নতুন আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ছবিঃ সংগ্রহ

স্পষ্ট মন্তব্যে কাঁপন

সম্প্রতি এক সাংবাদিক সম্মেলনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, “গাজায় ইসরায়েলের কর্মকাণ্ড যে যুদ্ধাপরাধ—তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।” এই বক্তব্য বিশ্ব কূটনৈতিক অঙ্গনে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। দীর্ঘদিন ধরে চলমান ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নিয়ে নানা প্রশ্ন থাকলেও মিলারের এই স্বীকৃতি বিষয়টিকে নতুন মোড় দিয়েছে।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার সম্প্রতি গাজায় ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডকে ‘সন্দেহাতীতভাবে যুদ্ধাপরাধ’ হিসেবে চিহ্নিত করে এক বিস্ফোরক মন্তব্য করেন। তার এই বক্তব্য আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তিনি বলেন, “গাজায় যা ঘটছে তা শুধু মানবিক সংকট নয়, বরং আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।”

যুদ্ধাপরাধের প্রমাণ ও বাস্তবতা

জাতিসংঘ, মানবাধিকার সংগঠন এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজায় নির্বিচারে বোমা হামলা, নারী-শিশু হত্যা এবং হাসপাতাল লক্ষ্য করে আক্রমণের অভিযোগ এনে আসছিল। এসব ঘটনায় লক্ষাধিক বেসামরিক মানুষের মৃত্যু ও ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়। ইসরায়েলের যুদ্ধাপরাধ প্রশ্নে বারবার তদন্ত দাবি উঠলেও এই প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের মুখপাত্র সরাসরি যুদ্ধাপরাধের ইঙ্গিত দিলেন।

যদিও দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত, তবে এই মন্তব্য সেই চিরাচরিত অবস্থান থেকে সরে আসার ইঙ্গিত কি না—তা নিয়ে বিশ্লেষকরা মতভেদে রয়েছেন। অনেকে বলছেন, আন্তর্জাতিক চাপ ও অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক উদ্বেগের কারণে যুক্তরাষ্ট্র এখন একটি ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করছে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

মিলারের মন্তব্যের পরপরই আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনা তীব্র হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের কিছু সদস্য রাষ্ট্র, মানবাধিকার সংগঠন এবং মুসলিম বিশ্ব ইতোমধ্যে এই বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছে। তারা মনে করছেন, এই স্বীকৃতি ভবিষ্যতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণে সহায়ক হতে পারে। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি আরও জোরালো হয়েছে।

গাজায় ইসরায়েলি হামলার ফলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে, বিদ্যুৎ ও পানির সংকট চরমে, এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়ে গেছে। লক্ষাধিক মানুষ গৃহহীন, এবং সহস্রাধিক শিশু প্রাণ হারিয়েছে। এই ভয়াবহ বাস্তবতা যুদ্ধাপরাধের একটি বড় প্রমাণ হয়ে উঠছে। এমন পরিস্থিতিতে মিলারের বক্তব্য ক্ষতিগ্রস্তদের ন্যায়বিচারের দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া ও অস্বীকৃতি

ইসরায়েল সরকার অবশ্য এই মন্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা বলছে, গাজায় তারা আত্মরক্ষার স্বার্থে হামলা চালিয়েছে এবং যুদ্ধ আইনের সীমার মধ্যে থেকেই তা করা হয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, লক্ষ্যহীন বোমাবর্ষণ ও বেসামরিক স্থাপনায় আক্রমণ যুদ্ধ আইন অনুযায়ী অপরাধ হিসেবেই গণ্য হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *