ঈদ ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু ১৪ মে থেকে

ঈদ টিকিট ২০২৫

ঈদের আগাম প্রস্তুতি শুরু, ট্রেন টিকিট বিক্রি ১৪ মে থেকে

বাংলাদেশ রেলওয়ে জানিয়েছে, আসন্ন ঈদুল আজহার ঘরমুখো যাত্রীদের জন্য ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হবে আগামী ১৪ মে ২০২৫ থেকে। প্রতি বছরের মতো এবারও যাত্রীরা নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী অনলাইনের মাধ্যমে অগ্রিম টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, টিকিট বিক্রির এই প্রক্রিয়া চলবে ধাপে ধাপে, যাতে যাত্রীদের চাপ সামাল দেওয়া যায় এবং সার্ভারে সমস্যা না হয়।

কোন দিনের টিকিট, কবে থেকে মিলবে?

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ১৪ মে বিক্রি হবে ১৯ মে-এর ট্রেনের টিকিট। এরপর ১৫ মে বিক্রি হবে ২০ মে-এর, এভাবে ১৮ মে পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে টিকিট বিক্রি চলবে। অর্থাৎ:

  • ১৪ মে – ১৯ মে-র টিকিট
  • ১৫ মে – ২০ মে-র টিকিট
  • ১৬ মে – ২১ মে-র টিকিট
  • ১৭ মে – ২২ মে-র টিকিট
  • ১৮ মে – ২৩ মে-র টিকিট

এছাড়া, ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু হবে ঈদের পরদিন থেকে। ফিরতি যাত্রীদের সুবিধার্থে, ফিরতি টিকিট বিক্রির সময়সূচিও আগেভাগে জানিয়ে দেওয়া হবে।

অনলাইনে কিভাবে টিকিট কাটবেন?

রেলওয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এবারও ঈদ স্পেশাল ট্রেনের ১০০% টিকিট অনলাইনে বিক্রি করা হবে। যাত্রীরা eticket.railway.gov.bd ও ‘Rail Sheba’ অ্যাপের মাধ্যমে নির্ধারিত সময়ে টিকিট কিনতে পারবেন। অনলাইনে টিকিট কাটার জন্য জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর ও মোবাইল নম্বর থাকা আবশ্যক। প্রতি যাত্রী সর্বোচ্চ চারটি টিকিট কিনতে পারবেন।

রেল কর্তৃপক্ষ যাত্রীদেরকে পরামর্শ দিয়েছে যেন তারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে এবং দ্রুত টিকিট বুক করে, কারণ ঈদ মৌসুমে সার্ভারে চাপ বাড়ে।

যাত্রীসেবায় বিশেষ ব্যবস্থা

রেলপথ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এবারের ঈদ যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেটসহ বিভিন্ন রুটে ঈদ স্পেশাল ট্রেন চালু থাকবে। একই সঙ্গে, প্ল্যাটফর্মে যাত্রীদের ভিড় নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন থাকবে। ঈদের আগের ৫ দিন এবং পরবর্তী ৫ দিন রেলের পক্ষ থেকে নিরবিচারে যাত্রীসেবা নিশ্চিত করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া, স্টেশনে প্রবেশ ও ট্রেনে উঠার সময় স্বাস্থ্যবিধি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে।

টিকিট কালোবাজারি রোধে কড়া ব্যবস্থা

গত কয়েক বছরে ঈদ উপলক্ষে ট্রেন টিকিটের কালোবাজারি একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তবে এবার রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, টিকিট বিক্রির পুরো প্রক্রিয়াই ডিজিটাল হওয়ায় কালোবাজারির সুযোগ কম। তবুও, আইটি টিম এবং গোয়েন্দা সংস্থা যৌথভাবে পর্যবেক্ষণ চালাবে যাতে কেউ অবৈধভাবে টিকিট মজুদ বা বিক্রি করতে না পারে। সাধারণ যাত্রীদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে—টিকিট শুধু সরকারি ওয়েবসাইট বা অ্যাপ থেকেই সংগ্রহ করার।

রেলওয়ে যাত্রীদেরকে নির্দিষ্ট স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠতে এবং নির্ধারিত সিটেই বসতে বলা হয়েছে। টিকিটে উল্লিখিত সময় ও ট্রেন অনুযায়ী যাত্রা করতে হবে। যাত্রীদের উচিত নির্ধারিত সময়ের আগে স্টেশনে পৌঁছানো, কারণ ভিড়ের কারণে প্রবেশে সময় লাগতে পারে। ব্যাগেজ ও মূল্যবান জিনিসপত্রের নিরাপত্তার দিকেও বিশেষভাবে নজর রাখতে বলা হয়েছে।

ঈদের আনন্দে নিশ্চিন্ত যাত্রা

বাংলাদেশ রেলওয়ে আশা করছে, সুষ্ঠু টিকিট ব্যবস্থা, অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ও যাত্রীদের সহযোগিতার মাধ্যমে এবারের ঈদ যাত্রা হবে আরামদায়ক ও ঝামেলামুক্ত। প্রতি বছরের মতো এবারও লাখো মানুষ ট্রেনে করে নিজ নিজ গন্তব্যে ফিরবেন ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিতে। তাই সরকার এবং রেল কর্তৃপক্ষ সবধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, যাতে প্রতিটি যাত্রা নিরাপদ, সময়ানুগ এবং আনন্দঘন হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *