এক সপ্তাহ পর সীমিত পরিসরে চালু হলো জাতীয় চক্ষু হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা

জাতীয় চক্ষু হাসপাতালে এক সপ্তাহ পর আবার চালু হলো সীমিত পরিসরের চিকিৎসাসেবা। জানুন সেবা বন্ধের কারণ, বর্তমান পরিস্থিতি ও রোগীদের অভিজ্ঞতা। ছবিঃ প্রথম আলো
রোগীদের জন্য স্বস্তির খবর: জাতীয় চক্ষু হাসপাতালে আবার শুরু হলো চিকিৎসা
এক সপ্তাহ ধরে বন্ধ থাকা জাতীয় চক্ষু হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা অবশেষে সীমিত পরিসরে আবার চালু হয়েছে। এই বন্ধের সময় হাজারো রোগী বিশেষত চোখের সমস্যায় ভুগছিলেন এবং তারা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত ছিলেন। সেবার পুনরায় শুরু হওয়ায় রোগী ও তাদের স্বজনদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। হাসপাতালের প্রশাসন জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে বহির্বিভাগে কিছু নির্দিষ্ট চিকিৎসাসেবা চালু করা হয়েছে।
জাতীয় চক্ষু হাসপাতালের সেবা এক সপ্তাহ আগে হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে যায়, যার পেছনে ছিল অভ্যন্তরীণ প্রশাসনিক জটিলতা এবং ডাক্তার ও কর্মচারীদের মধ্যে মতবিরোধ। বেশ কয়েকটি চিকিৎসক সংগঠন কর্মবিরতির মাধ্যমে তাদের দাবি আদায়ের আন্দোলনে অংশ নেয়, যার ফলে স্বাভাবিক সেবা কার্যক্রম ব্যাহত হয়। হাসপাতালের পরিচালনা বোর্ড বিষয়টি সমাধানে উদ্যোগ নেয়, এবং আলোচনার মাধ্যমে আংশিক সমাধান হওয়ায় এখন সীমিত পরিসরে সেবা চালু করা সম্ভব হয়েছে।
কোন বিভাগগুলো চালু হয়েছে
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বর্তমান পরিস্থিতিতে শুধুমাত্র বহির্বিভাগ ও সাধারণ চোখের পরামর্শ সেবা চালু করা হয়েছে। অপারেশন থিয়েটার ও ইনডোর রোগী ভর্তি কার্যক্রম এখনো স্থগিত রয়েছে। দৈনিক নির্দিষ্ট সংখ্যক রোগীকে দেখা হচ্ছে এবং অনলাইন রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে আসতে বলা হয়েছে। রোগীদের চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
সেবাবন্ধের এই এক সপ্তাহে অনেক রোগীকে ফিরে যেতে হয়েছে চিকিৎসা না পেয়ে। বিশেষত যাদের চোখে জটিল সমস্যা ছিল, তাদের ক্ষেত্রে এই বিলম্ব বিপজ্জনক হতে পারত। অনেকে আবার বাধ্য হয়ে প্রাইভেট ক্লিনিকে গিয়ে ব্যয়বহুল চিকিৎসা গ্রহণ করেন। রোগী ও তাদের স্বজনদের অভিযোগ ছিল, এই ধরনের প্রতিষ্ঠানে এমন সেবা বন্ধ হওয়া উচিত নয় যেখানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে রোগীরা চিকিৎসা নিতে আসেন।
কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিভঙ্গি ও আশ্বাস
হাসপাতালের পরিচালন কমিটির এক সদস্য জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেবা পুনরায় চালুর জন্য সবধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং বাকি দাবিগুলো পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়নের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষ আশা করছে, অচিরেই সম্পূর্ণ সেবা কার্যক্রম চালু করা যাবে এবং ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি এড়াতে একটি স্থায়ী সমাধান তৈরি করা হবে।
চিকিৎসক ও নার্সরা সেবা চালুর ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন। তাদের মতে, রোগীদের কথা চিন্তা করে যত দ্রুত সম্ভব পুরোদমে সেবা চালু করা উচিত। অনেকে তাদের দাবির সঙ্গে আপস করে সীমিত পরিসরে হলেও রোগী দেখা শুরু করেছেন। তারা বলছেন, স্বাস্থ্যসেবা একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র, যেখানে মানবিকতা এবং দায়িত্ববোধ সব সময় অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত।