ডিসিসিআই’র আপত্তি: শুধু গার্মেন্টস খাতে বন্দরের ভাড়া ছাড় নিয়ে প্রশ্ন

শুধু তৈরি পোশাক খাতকে বন্দরের ভাড়া মওকুফের সিদ্ধান্ত নিয়ে আপত্তি তুলেছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। ব্যবসায়িক সমতা এবং নীতিগত স্বচ্ছতা নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন। ছবিঃ দ্যা ডেইলি ষ্টার
ডিসিসিআই’র উদ্বেগ প্রকাশ
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) সম্প্রতি সরকার ঘোষিত একটি নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে স্পষ্ট আপত্তি জানিয়েছে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, তৈরি পোশাক (RMG) খাতকে দেশের বন্দর ব্যবহারের ক্ষেত্রে একচেটিয়া ভাড়ার ছাড় দেওয়া হয়েছে। ডিসিসিআই মনে করছে, এই পদক্ষেপটি অন্যান্য রপ্তানিমুখী খাতগুলোর প্রতি বৈষম্যমূলক এবং ব্যবসায়িক পরিবেশে অসাম্য তৈরি করতে পারে। সংস্থাটি আরও বলেছে, এই ধরণের একপাক্ষিক সুবিধা পুরো রপ্তানি খাতের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
বিদ্যমান রপ্তানি খাতের অবদান উপেক্ষিত হচ্ছে
বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ আসে চামড়া, প্লাস্টিক, হোম টেক্সটাইল, ও কৃষিপণ্যসহ অন্যান্য খাত থেকেও। ডিসিসিআই অভিযোগ করেছে, কেবলমাত্র তৈরি পোশাক খাতকে ভাড়ার ছাড় প্রদান এই খাতগুলোর অবদানকে খাটো করে দেখা হচ্ছে। এই অসম নীতি অন্যান্য উদ্যোক্তাদের হতাশ করতে পারে, যারা একই ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন। ব্যবসায়িক সমতা রক্ষা করতে হলে, নীতির আওতা বাড়িয়ে সব রপ্তানিযোগ্য খাতকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানানো হয়েছে।
: শিল্প নীতিতে স্বচ্ছতা এবং ভারসাম্য চায় ডিসিসিআই
ডিসিসিআই জানিয়েছে, সরকারি নীতিনির্ধারকদের উচিত শিল্পখাতে ন্যায্যতা এবং প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ বজায় রাখা। কেবলমাত্র একটি নির্দিষ্ট খাতকে সুবিধা প্রদান করলে অন্য খাতগুলো বাজারে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বে। এতে করে দেশের সামগ্রিক রপ্তানি প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হতে পারে। তারা পরামর্শ দিয়েছে, নীতিনির্ধারণে স্বচ্ছতা এবং সব খাতের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য একটি স্বাধীন মূল্যায়ন কমিটি গঠন করা হোক।
সরকারি সূত্র অনুযায়ী, তৈরি পোশাক খাত বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ রপ্তানি খাত এবং লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থানের উৎস। এই খাতকে আরও প্রতিযোগিতামূলক করার জন্য বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়েছে। তবে ডিসিসিআই বলছে, বৃহৎ খাত হওয়ার মানেই এই নয় যে অন্যদের অগ্রাধিকার বঞ্চিত করতে হবে। বরং সকল খাতের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করলে দেশী ও বৈদেশিক বিনিয়োগ আরও উৎসাহিত হবে।
ভবিষ্যৎ বিনিয়োগে প্রভাব পড়তে পারে
ডিসিসিআই সতর্ক করেছে, এই একচেটিয়া সুবিধা দীর্ঘমেয়াদে শিল্প খাতের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করতে পারে। এটি ভবিষ্যতে অন্যান্য রপ্তানি খাতে বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করবে এবং ব্যবসায়িক পরিবেশে অনিশ্চয়তা তৈরি করবে। অনেক উদ্যোক্তা ইতোমধ্যেই এই নীতিকে পক্ষপাতদুষ্ট বলে মন্তব্য করেছেন এবং দাবি করেছেন, এক্ষেত্রে দ্রুত নীতিমালা পুনর্বিবেচনার প্রয়োজন রয়েছে। ব্যবসায়িক স্থিতিশীলতার জন্য এমন বিতর্কিত সিদ্ধান্ত এড়িয়ে চলাই শ্রেয়।