বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে আমার অধিকার প্রয়োগ করতে প্রস্তুত

প্রবাসে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্বকারী খলিলুর রহমান জানালেন, তিনি এখন দেশের মাটিতে একজন নাগরিক হিসেবে নিজের সাংবিধানিক অধিকার প্রয়োগ করতে প্রস্তুত। বিস্তারিত জানুন তার বক্তব্য ও প্রেক্ষাপট। ছবি: প্রথম আলো
প্রবাস জীবন শেষে সরব খলিলুর রহমান
দীর্ঘ সময় যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর খলিলুর রহমান এখন দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির আলোচনায় উঠে এসেছেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, “আমি এখন একজন সাধারণ বাংলাদেশি নাগরিক, এবং আমার সাংবিধানিক অধিকার প্রয়োগে আমি সম্পূর্ণ প্রস্তুত।” তার এই বক্তব্য বিভিন্ন মহলে নানা প্রশ্ন এবং ব্যাখ্যার জন্ম দিয়েছে। তিনি কি সরাসরি রাজনীতিতে যুক্ত হচ্ছেন, নাকি এটি একটি প্রতীকী অবস্থান? সেই বিষয়ে জনমনে কৌতূহল বাড়ছে।
নাগরিক অধিকার নিয়ে তার অবস্থান
খলিলুর রহমান জানান, দেশের সংবিধান প্রতিটি নাগরিককে কিছু নির্দিষ্ট অধিকার দিয়েছে—যার মধ্যে ভোটাধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, সংগঠনের অধিকার এবং রাজনৈতিক অংশগ্রহণের সুযোগ অন্যতম। একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে তিনি এই অধিকারগুলো যথাযথভাবে প্রয়োগ করতে চান। প্রবাস জীবনে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি সবসময় দেশের আইন ও সংবিধানকে শ্রদ্ধা করে চলেছেন বলেও উল্লেখ করেন।
রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা কি আসন্ন?
তাঁর এই বক্তব্যকে অনেকেই রাজনৈতিক অঙ্গনে সক্রিয় হওয়ার বার্তা হিসেবে নিচ্ছেন। তিনি সরাসরি কোনো দল বা রাজনৈতিক জোটের নাম উল্লেখ না করলেও, তার বক্তব্যে ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার ইঙ্গিত স্পষ্ট। বিশেষ করে বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তার মতো অভিজ্ঞ ও আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত ব্যক্তিত্বের অংশগ্রহণ জাতীয় রাজনীতিতে ভিন্ন মাত্রা যোগ করতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
খলিলুর রহমান বলেন, “আমি যে অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান বিদেশে কূটনীতিক হিসেবে অর্জন করেছি, সেটি দেশের কল্যাণে ব্যবহার করতে চাই।” তিনি বিশ্বাস করেন, একজন নাগরিকের মূল দায়িত্ব দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, এবং তিনি সেই দায়িত্ব পালনে আত্মনিয়োগ করতে প্রস্তুত। উন্নয়ন, সুশাসন এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক উন্নয়নে তার ভূমিকা রাখতে চাওয়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন।
নির্বাচন প্রসঙ্গে স্পষ্ট বার্তা
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের প্রসঙ্গও উঠে এসেছে তার বক্তব্যে। তিনি জানান, “নির্বাচন হলো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় মাধ্যম যেখানে জনগণ তাদের প্রতিনিধি বেছে নেয়। একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আমি ভোট দিতে চাই, মতামত জানাতে চাই এবং প্রয়োজনে প্রার্থী হওয়ারও অধিকার আমার রয়েছে।” তার এই বক্তব্যকে অনেকেই নির্বাচনী মাঠে সরাসরি অংশগ্রহণের আগাম প্রস্তুতি হিসেবেও দেখছেন।
খলিলুর রহমানের বক্তব্যের পর দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ কেউ তার সাহসী অবস্থানকে স্বাগত জানালেও, অন্য কেউ হয়তো বিষয়টিকে সতর্ক দৃষ্টিতে দেখছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজনীতিতে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালনকারী নয়, বরং আন্তর্জাতিকভাবে প্রশিক্ষিত ও সচেতন নাগরিকদের অংশগ্রহণ দেশকে গণতন্ত্রের পথে আরও শক্তিশালী করতে পারে।
সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা
তার এই বক্তব্য সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ইতিমধ্যে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। ফেসবুক, টুইটার ও ইউটিউবে নানা বিশ্লেষণ, মতামত ও সমর্থনের ঝড় উঠেছে। অনেকেই বলছেন, একজন প্রবাসফেরত কূটনীতিকের এমন স্পষ্ট ও দৃঢ় বক্তব্য নতুন প্রজন্মকে রাজনৈতিকভাবে সচেতন ও আগ্রহী করে তুলবে। বিশেষ করে তরুণ সমাজের মধ্যে তার বক্তব্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
খলিলুর রহমান যদিও তার ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা স্পষ্টভাবে জানাননি, তবে তিনি যে দেশের জন্য কিছু করতে চান, সেটি তার কথায় স্পষ্ট। তার মতো অভিজ্ঞ এবং শিক্ষিত একজন নাগরিকের সক্রিয় ভূমিকা দেশের রাজনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে। আগামী দিনগুলোতে তিনি কোন পথে এগোন, সেটি নজরকাড়া বিষয় হয়ে থাকবে রাজনৈতিক অঙ্গনে।