বিএনপির ডাকা হরতালে রাজধানীতে সহিংসতা:

বিএনপির ডাকা হরতালে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ অনেকে আহত হন। আন্দোলনের বাস্তব চিত্র ও রাজনৈতিক বিশ্লেষণ জানুন বিস্তারিতভাবে।ছবি: বাংলাদেশ টুডে
রাজনৈতিক পটভূমি: কেন হরতাল?
বিএনপি চলমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরকারের বিরুদ্ধে হরতালের ডাক দেয়। দলের পক্ষ থেকে বলা হয়, জনগণের ন্যায্য দাবি নিয়ে তারা রাজপথে নামতে বাধ্য হয়েছে। এই হরতাল শুধু দলীয় কর্মসূচি নয়, বরং একটি জাতীয় প্রতিবাদের প্রতীক হিসেবে তারা উল্লেখ করে।
বিএনপি নেতারা দাবি করেন, দেশে গণতন্ত্র হুমকির মুখে এবং জনগণের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। এই অবস্থায় হরতাল একটি গণআন্দোলনের অংশ।
রাজধানীতে সংঘর্ষ: কোথায় কী ঘটল?
হরতালের দিনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা—যেমন পল্টন, নয়াপল্টন, শান্তিনগর, মালিবাগ—তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। বিএনপি কর্মীরা রাস্তায় অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে শুরু করলে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস ও লাঠিচার্জ করে। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় কয়েকটি স্থানে ইট-পাটকেল ছোড়ার ঘটনাও ঘটে।
এই সংঘর্ষে ১০ জনের বেশি মানুষ আহত হন, যাদের মধ্যে রয়েছেন একজন নারী সাংবাদিক ও একজন ক্যামেরাম্যান। আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রাজধানীতে সংঘর্ষ: কোথায় কী ঘটল?
হরতালের দিনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা—যেমন পল্টন, নয়াপল্টন, শান্তিনগর, মালিবাগ—তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। বিএনপি কর্মীরা রাস্তায় অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে শুরু করলে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস ও লাঠিচার্জ করে। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় কয়েকটি স্থানে ইট-পাটকেল ছোড়ার ঘটনাও ঘটে।
এই সংঘর্ষে ১০ জনের বেশি মানুষ আহত হন, যাদের মধ্যে রয়েছেন একজন নারী সাংবাদিক ও একজন ক্যামেরাম্যান। আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনার সময় কয়েকজন সাংবাদিককে বাধা দেওয়া হয় ছবি ও ভিডিও ধারণে। একজন সাংবাদিক জানান, “আমরা নিরপেক্ষ সংবাদ কাভার করতে গিয়ে নিজেরাই আক্রমণের শিকার হই।” এই ঘটনাকে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যম সংগঠন এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে।
পুলিশের দৃষ্টিভঙ্গি ও নিরাপত্তা প্রস্তুতি
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে জানানো হয়, “হরতালের নামে কেউ জনজীবনে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারবে না।” ডিএমপি কমিশনার জানান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে তারা প্রতিটি মোড়ে অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করেছেন।
তবে মানবাধিকার কর্মীদের দাবি, হরতাল মানেই যে সহিংসতা নয়—তা বোঝা জরুরি। পুলিশ যেন অহেতুক বলপ্রয়োগ না করে এবং সংবিধান অনুযায়ী শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির সুযোগ দেয়।
বিএনপির প্রতিক্রিয়া ও পরবর্তী পরিকল্পনা
সংঘর্ষের পর এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “সরকার জনআন্দোলনকে দমন করতে চায় বলেই পুলিশ লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে।” তিনি বলেন, এই হামলা বিএনপির মনোবল ভাঙতে পারবে না এবং আন্দোলন আরও তীব্র হবে।
বিএনপির নেতারা আরও জানান, তারা পরবর্তী কর্মসূচি হিসেবে বিভাগীয় শহরগুলোতে গণসমাবেশ ও ‘অবরোধ কর্মসূচি’ চিন্তা করছেন।
হরতালের বাস্তব প্রভাব: জনজীবন কতটা ব্যাহত?
ঢাকা শহরের বিভিন্ন রাস্তায় যান চলাচল সীমিত ছিল। সরকারি যানবাহন চালু থাকলেও, প্রাইভেট যানবাহনের সংখ্যা কমে যায়। অনেক দোকানপাট বন্ধ থাকে, বিশেষ করে রাজনৈতিক উত্তেজনাপূর্ণ এলাকাগুলিতে। সাধারণ জনগণও আতঙ্কে বাসা থেকে বের হননি।
হরতালের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো আংশিকভাবে বন্ধ থাকে এবং কর্মজীবীদের উপস্থিতি কমে যায়। স্বাস্থ্যখাত ও জরুরি সেবা ব্যতীত সব কিছুতে প্রভাব পড়ে।
রাজনৈতিক শান্তি ফিরবে কবে?
বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতা দেশের উন্নয়নে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। হরতাল, অবরোধ ও সহিংসতার রাজনীতি থেকে বেরিয়ে একটি সমঝোতার পরিবেশ তৈরির জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনার বিকল্প নেই।
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা রক্ষা করতে হলে রাজনৈতিক সহনশীলতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে—এমনটাই মত অনেক বিশ্লেষকের।