বিদেশি সহায়তা হ্রাসে বাংলাদেশের উন্নয়ন খাতে সংকটের আশঙ্কা

বাংলাদেশের উন্নয়ন খাতে বিদেশি সহায়তার প্রবাহ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে, যা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য উদ্বেগের কারণ। বিশেষজ্ঞরা টেকসই অর্থায়নের জন্য বিকল্প উৎস খুঁজে বের করার পরামর্শ দিচ্ছেন। ছবি: বিগ স্টক
বিদেশি সহায়তার হ্রাস: উন্নয়ন খাতে উদ্বেগ
বাংলাদেশের উন্নয়ন খাতে বিদেশি সহায়তার প্রবাহ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে, যা বিশেষ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, গত বছর দেশের বেসরকারি সংস্থাগুলো ৬৫৫ মিলিয়ন ডলার বিদেশি সহায়তা পেয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ১১.৬% কম।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বৈশ্বিক দাতাদের আগ্রহ হ্রাস, বাংলাদেশের মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়া, আন্তর্জাতিক অগ্রাধিকারের পরিবর্তন এবং সহায়তা নীতিমালার পরিবর্তন এই হ্রাসের পেছনে প্রধান কারণ। এসব পরিবর্তনের ফলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য পরিচালিত উন্নয়ন প্রকল্পগুলো ঝুঁকির মুখে পড়েছে।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থার হঠাৎ নীতিগত পরিবর্তনের ফলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন প্রকল্প স্থগিত হয়েছে। এই প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, নারী ক্ষমতায়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার উদ্যোগ। ফলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রা আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।
টেকসই অর্থায়নের জন্য বিকল্প উৎসের প্রয়োজন
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, উন্নয়ন কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে টেকসই অর্থায়নের জন্য বিকল্প উৎস খুঁজে বের করা জরুরি। এক্ষেত্রে মাইক্রোফাইন্যান্স, সামাজিক উদ্যোগ এবং কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (CSR) তহবিল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। CPD-এর গবেষণা পরিচালক ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, “CSR তহবিলের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে একটি শক্তিশালী নীতিমালা প্রয়োজন।”
ভবিষ্যতের জন্য সুপারিশ
উন্নয়ন খাতে বিদেশি সহায়তার উপর নির্ভরতা কমিয়ে স্বনির্ভরতা অর্জনের জন্য সরকার, বেসরকারি সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। এছাড়া, স্থানীয় সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার এবং দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে উন্নয়ন কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া সম্ভব।