সড়ক অবরোধ না করতে ডিএমপির অনুরোধ: নাগরিকদের সচেতন হওয়ার আহ্বান

সড়ক অবরোধ

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) নাগরিকদের সড়ক অবরোধ না করে আন্দোলন ও কর্মসূচি পালনের অনুরোধ জানিয়েছে। সুষ্ঠু যান চলাচল নিশ্চিত করতে ডিএমপির সচেতনতামূলক বার্তা। ছবিঃ বাংলা ট্রিবিউন

ডিএমপির পক্ষ থেকে সতর্কতা

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এক বিবৃতিতে সড়ক অবরোধ করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না করার জন্য নাগরিকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে। চলমান রাজনৈতিক, সামাজিক কিংবা ধর্মীয় যেকোনো কর্মসূচির ক্ষেত্রে ট্রাফিক চলাচলে যেন বিঘ্ন না ঘটে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে সংস্থাটি। রাজধানীতে জনসংখ্যা ও যানবাহনের চাপ প্রতিনিয়ত বাড়ছে, ফলে সামান্য প্রতিবন্ধকতাও বড় ধরনের যানজট তৈরি করে।

ডিএমপির মতে, কেউ যদি সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ, মিছিল বা সভা-সমাবেশ করে, তবে তা শুধু সাধারণ যাত্রীদের অসুবিধাই সৃষ্টি করে না, বরং হাসপাতালগামী রোগী, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও জরুরি সেবার যানবাহনগুলোর চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। ফলে, জনগণের নিরাপত্তা এবং সুশৃঙ্খল যাতায়াত নিশ্চিত করতে হলে এসব কর্মসূচি আয়োজনের ক্ষেত্রে যথাযথ অনুমতি নেওয়া এবং বিকল্প জায়গা বেছে নেওয়া প্রয়োজন।

ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় চ্যালেঞ্জ ও প্রস্তুতি

ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ প্রতিদিনই রাজধানীর বিভিন্ন ব্যস্ত এলাকায় যানজট নিরসনে কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু যখন হঠাৎ কোনো সংগঠন রাস্তা আটকে কর্মসূচি পালন করে, তখন কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা বিপাকে পড়েন। অনেক সময় আগাম না জানিয়ে রাস্তায় অবস্থান নেওয়া হয়, ফলে কোনো প্রস্তুতি নিতে পারা যায় না। এতে যানজট দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে আশেপাশের এলাকায়, এবং ঘণ্টার পর ঘণ্টা ভোগান্তিতে পড়েন হাজারো যাত্রী।

ডিএমপি জানিয়েছে, অনুমতি ছাড়া রাস্তা অবরোধ বা যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটানো আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ আইনের অধীনে এই ধরনের কার্যক্রম প্রতিরোধ করতে প্রয়োজনে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এমনকি প্রয়োজন হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের ও গ্রেপ্তার করাও হতে পারে। তবে সংস্থাটি আশা করে, নাগরিকরা সচেতনভাবে আইন মানবেন এবং অযথা জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করবেন না।

বিকল্প প্রতিবাদ বা কর্মসূচির স্থান ব্যবহারের পরামর্শ

ডিএমপি বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে—যদি তারা কোনো কর্মসূচি পালন করতে চান, তবে তাদের যেন নির্ধারিত খোলা মাঠ, মিলনায়তন বা পার্ক ব্যবহার করে কর্মসূচি পালন করা উচিত। এতে সাধারণ মানুষের চলাচলে বিঘ্ন না ঘটিয়ে কার্যকরভাবে বার্তা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়। এছাড়াও, প্রশাসনের কাছে পূর্বেই কর্মসূচির বিবরণ দিয়ে অনুমতি নেওয়াও জরুরি।

সড়কে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ডিএমপি ইতোমধ্যে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার চালাচ্ছে। পাশাপাশি, রেডিও ও টেলিভিশনের মাধ্যমেও মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মন্দিরসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম থেকে নাগরিকদের সচেতন করতে বিশেষ প্রচারণা চালানো হবে বলে জানানো হয়েছে। ট্রাফিক আইন মেনে চললে নগরজীবন আরও স্বাচ্ছন্দ্যময় হবে, এমন বার্তাই ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।

শুধু আইন প্রয়োগ নয়, নাগরিকদের দায়িত্ববোধও এই সমস্যার সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ। সচেতন নাগরিক কখনোই নিজের অধিকার প্রয়োগ করতে গিয়ে অন্যের স্বাধীনতা বা চলাচল বিঘ্নিত করেন না। রাজধানীর উন্নত ট্রাফিক ব্যবস্থা গড়তে হলে সবাইকে সচেতন হতে হবে। বিশেষ করে শিক্ষিত শ্রেণি ও নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তিদের উচিত এই বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *