সাভারে সরকারি স্টেডিয়াম নির্মাণে নদী দখলের অভিযোগ:

সাভার

সাভারের ভাঙ্গারপুল এলাকায় ধলেশ্বরী নদীর জমি দখল করে সরকারি স্টেডিয়াম নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। পরিবেশবিদরা বলছেন, এভাবে নদী দখল পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি।  ছবি: প্রথম আলো ইংলিশ

সাভারে স্টেডিয়াম নির্মাণে নদী দখলের অভিযোগ

ঢাকার সাভার উপজেলার ভাঙ্গারপুল এলাকায় ধলেশ্বরী নদীর জমি দখল করে একটি সরকারি স্টেডিয়াম নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আগে যেখানে নদীর পানি প্রবাহিত হতো, এখন সেখানে স্টেডিয়াম ও দোকানপাট গড়ে উঠেছে।

নদীর জমিতে স্টেডিয়াম: নথিপত্রে প্রমাণ

প্রথম আলোর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সাভার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় এবং উপজেলা ভূমি অফিস থেকে প্রাপ্ত নথিপত্র অনুযায়ী, শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণের জন্য ২০১৯ সালের ১৫ এপ্রিল কাজ শুরু হয়। নথিতে উল্লেখিত ২ একর ৬ শতাংশ খাস জমির বাইরে অতিরিক্ত ৯৪ শতাংশ জমি দখল করে স্টেডিয়ামটি নির্মাণ করা হয়েছে, যা ধলেশ্বরী নদীর অংশ।

নদীর জমি দখল আইনগতভাবে অবৈধ

নদী গবেষক শেখ রোকন বলেন, “সিএস রেকর্ড অনুযায়ী কোনো জমি যদি নদী হিসেবে চিহ্নিত থাকে, তাহলে তা আইনগতভাবে নদীর জমি হিসেবে বিবেচিত হবে। সরকার বা কোনো ব্যক্তি সেই জমি দখল করতে পারে না।”​

২০১৯ সালের ১ জুলাই হাইকোর্টের রায়ে বাংলাদেশের নদীগুলোকে জীবন্ত সত্তা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এই রায়ে বলা হয়, নদী, খাল, জলাশয়সহ সব প্রাকৃতিক সম্পদ জনগণের সম্পত্তি, যা রক্ষা করার দায়িত্ব সরকারের।​

স্টেডিয়াম নির্মাণে রাজনৈতিক প্রভাব?

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, তৎকালীন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান এই প্রকল্পটি এগিয়ে নিয়েছেন। যদিও সাধারণত স্টেডিয়াম নির্মাণের দায়িত্ব যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের।​

প্রকল্পটি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাস্তবায়িত হয়। এই প্রকল্পের জন্য ৪০ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ টাকা এবং ২৫০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়।

পরিবেশের ওপর প্রভাব

নদী দখলের ফলে ধলেশ্বরী নদীর প্রাকৃতিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আগে বর্ষাকালে এই নদীতে নৌকা চলাচল করত, এখন সেই জায়গায় মাটি ভরাট করে দোকানপাট গড়ে উঠেছে।​

পরিবেশবিদরা বলছেন, এভাবে নদী দখল পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি। নদীর প্রাকৃতিক প্রবাহ বন্ধ হলে জলাবদ্ধতা, মাটির ক্ষয় এবং জীববৈচিত্র্যের হ্রাসের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *