শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে এনসিপি’র নতুন যুব সংগঠন ‘যুবশক্তি’র উদ্বোধন

রাজনৈতিক উদ্যোগ

জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টি (এনসিপি) তরুণদের রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় করতে শুক্রবার চালু করছে তাদের নতুন যুব শাখা ‘যুবশক্তি’। এই উদ্যোগ তরুণ নেতৃত্ব ও সামাজিক পরিবর্তনের পথ প্রশস্ত করবে। ছবিঃ ডেইলি অবসাবের

এনসিপি’র নতুন রাজনৈতিক পদক্ষেপ: ‘যুবশক্তি’ নামে যুব সংগঠন চালু

জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টি (NCP) আগামী শুক্রবার একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে যাচ্ছে, যেখানে তরুণদের রাজনৈতিক অন্তর্ভুক্তিকে কেন্দ্র করে তৈরি করা হয়েছে নতুন যুব শাখা ‘যুবশক্তি’। এনসিপি মনে করে, রাজনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতির মূল চালিকাশক্তি হচ্ছে দেশের যুবসমাজ। তাই তাদের সংগঠিত করে একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক কাঠামোর অংশ হিসেবে গড়ে তুলতে ‘যুবশক্তি’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এই সংগঠনের মাধ্যমে শুধু রাজনৈতিক আন্দোলন নয়, বরং সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রেও তরুণদের নিয়ে কাজ করবে দলটি।

যুব নেতৃত্বের বিকাশে ‘যুবশক্তি’র বিশেষ গুরুত্ব

এনসিপি বরাবরই তরুণ নেতৃত্বের বিকাশে বিশ্বাসী। ‘যুবশক্তি’ গঠনের মাধ্যমে তারা তরুণদের জন্য একটি আনুষ্ঠানিক প্ল্যাটফর্ম তৈরি করছে, যেখানে শিক্ষিত ও উদ্যমী যুবকেরা রাজনৈতিক সচেতনতা ও দক্ষতা অর্জন করতে পারবে। দলটি আশা করছে, এই সংগঠনের মাধ্যমে নতুন নেতাদের উত্থান ঘটবে যারা আগামী দিনের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারবে। ‘যুবশক্তি’ হবে একটি উদ্দীপনামূলক আন্দোলনের সূচনা, যা তরুণদের চিন্তা, উদ্ভাবন ও নেতৃত্বের গুণাবলি বিকশিত করবে।

‘যুবশক্তি’ শুধু রাজনৈতিক শিক্ষার উপর নির্ভর করবে না, বরং এটি হবে একটি সক্রিয় সামাজিক প্ল্যাটফর্ম, যা শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান, প্রযুক্তি এবং পরিবেশ ইত্যাদি ইস্যুতে কাজ করবে। সংগঠনটির উদ্দেশ্য, তরুণদের মাধ্যমে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা এবং একটি দায়িত্বশীল নাগরিক গোষ্ঠী তৈরি করা। রাজনৈতিক মতভেদ বা বিভাজনের ঊর্ধ্বে উঠে এই সংগঠন সমাজকল্যাণমূলক কার্যক্রমে নিজেকে নিয়োজিত রাখতে চায়।]

ডিজিটাল মাধ্যমে তরুণদের সংযুক্ত করার পরিকল্পনা

বর্তমান সময়ে তরুণ প্রজন্মের বড় একটি অংশ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সক্রিয়। এনসিপি তা ভালোভাবেই উপলব্ধি করেছে এবং সে কারণেই ‘যুবশক্তি’র কার্যক্রমকে ডিজিটাল মাধ্যমেও বিস্তার করার পরিকল্পনা নিয়েছে। তরুণদের আকৃষ্ট করতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণা, ভার্চুয়াল প্রশিক্ষণ, ওয়েব সেমিনার এবং মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে সদস্যপদ গ্রহণের সুযোগ থাকছে। এতে দেশ-বিদেশে বসবাসরত আগ্রহী যুবকেরাও সহজেই যুক্ত হতে পারবেন।

যুবশক্তি

ছবিঃ ডেইলি অবসাবের

দেশব্যাপী সংগঠন বিস্তারের রোডম্যাপ

‘যুবশক্তি’ শুধু শহরকেন্দ্রিক সংগঠন হিসেবে গড়ে উঠবে না, বরং গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত অঞ্চলেও এর শাখা বিস্তার করা হবে। প্রতিটি রাজ্যে আলাদা রাজ্য কমিটি গঠনের মাধ্যমে সংগঠনের কাঠামো শক্তিশালী করা হবে। স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়েও ‘যুবশক্তি’র ছাত্র শাখা গঠন করার পরিকল্পনা রয়েছে, যাতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে নেতৃত্ব গঠনের প্রবণতা তৈরি হয়। একাধিক ভাষায় প্রচারাভিযান চালিয়ে সংগঠনটি সর্বস্তরের তরুণদের কাছে পৌঁছাতে চায়।

‘যুবশক্তি’ সংগঠনে নারী সদস্যদের সক্রিয় অংশগ্রহণে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এনসিপি মনে করে, নারীদের ক্ষমতায়ন ছাড়া একটি সুস্থ ও উন্নত সমাজ গঠন সম্ভব নয়। তাই নারী নেতৃত্ব তৈরিতে আলাদা প্রশিক্ষণ কর্মসূচি, ফোরাম এবং প্রজেক্ট চালু করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। নারী সদস্যদের জন্য আলাদা কোটা নিশ্চিত করা হবে যাতে তারা সংগঠনের সর্বস্তরে নেতৃত্ব দিতে পারেন।

ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক নেতৃত্ব গড়ার প্ল্যাটফর্ম

এই সংগঠনটির মাধ্যমে তরুণদের মধ্যে যে নেতৃত্বের গুণাবলি বিকাশ পাবে, তা কেবল দলীয় রাজনীতিতেই নয়, বরং জাতীয় পর্যায়েও প্রভাব ফেলবে। ভবিষ্যতের সংসদ সদস্য, মন্ত্রী, নীতিনির্ধারক, এমনকি সমাজ সংস্কারক এই সংগঠন থেকেই উঠে আসবে—এমন প্রত্যাশা দলের। একদিকে যেমন তরুণদের মতামত ও ভাবনা গুরুত্ব পাবে, অন্যদিকে দেশের বাস্তব সমস্যার সমাধানে তারা কার্যকরভাবে অংশ নিতে পারবে।

‘যুবশক্তি’ এনসিপি’র একটি সাহসী ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ। একটি প্রগতিশীল জাতি গঠনে তরুণদের ভূমিকা অপরিসীম। এনসিপি’র এই নতুন সংগঠন তরুণদের নেতৃত্বে এনে শুধু রাজনৈতিক অঙ্গনেই নয়, সমাজের নানা ক্ষেত্রে পরিবর্তনের সূত্রপাত ঘটাতে পারে। এখন দেখার বিষয়, ‘যুবশক্তি’ কিভাবে বাস্তবায়ন হয় এবং তার প্রভাব রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিমণ্ডলে কেমন হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *