বেনাপোলে আটকা ৩৬টি আরএমজি পণ্যবাহী ট্রাক, রপ্তানি সঙ্কটে উদ্বেগ

বেনাপোল স্থলবন্দর এলাকায় আটকা পড়েছে ৩৬টি তৈরি পোশাক (আরএমজি) পণ্যবাহী ট্রাক। এ কারণে রপ্তানি কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে এবং ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন। ছবিঃ প্রথম আলো
আরএমজি খাতের জন্য বড় ধরনের প্রভাব
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তৈরি পোশাক খাত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাত। দেশের রপ্তানির বড় অংশই আসে আরএমজি পণ্য থেকে। বেনাপোলে ট্রাক আটকা পড়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ খাতের রপ্তানি কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে, যা সরাসরি ব্যবসায়িক ক্ষতি ডেকে আনছে। ট্রাকের মালিক ও রপ্তানিকারকরা এই অবস্থায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং দ্রুত সমাধানের দাবি জানিয়েছেন।
রপ্তানি মালিকরা বলছেন, বেনাপোলে এই দীর্ঘদিন আটকা পড়ার ফলে পণ্যের গুণগত মান ও ডেলিভারি সময়সূচিতে সমস্যা হচ্ছে। অনেক পণ্য সময়মতো গন্তব্যে না পৌঁছানোর কারণে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে। এছাড়াও আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের সঙ্গে বিশ্বাসযোগ্যতা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, যা ভবিষ্যতে রপ্তানির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
কর্তৃপক্ষের করণীয় ও পদক্ষেপ
বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা দ্রুত এই সমস্যার সমাধানে কাজ করছে। অবকাঠামোগত উন্নয়ন, কাস্টমস প্রক্রিয়া দ্রুততর করা এবং ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা উন্নত করার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ট্রাক ও মালামালের অযাচিত আটকা পড়া এড়াতে আরও কার্যকর নজরদারি বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
যদিও কর্তৃপক্ষ সমাধানের কথা বলছে, পরিবহন মালিক ও চালকরা অসন্তোষ প্রকাশ করে বিভিন্ন সময়ে প্রতিবাদ মিছিল ও কর্মসূচি চালাচ্ছেন। তাদের দাবি দ্রুত এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান করা হোক এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা হোক। তারা জানাচ্ছেন, দীর্ঘ সময় ট্রাক আটকা পড়া ব্যবসার জন্য মারাত্মক ক্ষতি।
সমাধানের জন্য সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন
রপ্তানি খাতের এই সংকট কাটিয়ে উঠতে দরকার সরকার, বন্দর কর্তৃপক্ষ ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে সুসম্পর্ক ও সমন্বিত উদ্যোগ। অবকাঠামো উন্নয়ন, প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো এবং প্রশাসনিক জটিলতা দূরীকরণে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। তা ছাড়া বেনাপোল বন্দরের কার্যক্রম আরও দক্ষ ও স্বচ্ছ করতে প্রয়োজনীয় সংস্কার আনা জরুরি।
বেনাপোল স্থলবন্দর দেশের অন্যতম রপ্তানির প্রবেশদ্বার হিসেবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই বন্দরের কার্যক্রম ঝকঝকে ও সমস্যামুক্ত করতে হবে যাতে আরএমজি ও অন্যান্য পণ্যের রপ্তানি বাধামুক্ত হয়। ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিলে আগামী দিনগুলোতে বেনাপোল বন্দরের সমস্যাগুলো কমবে এবং দেশের রপ্তানি খাত আরো বিকশিত হবে।