জনগণের সমর্থনে দায়িত্ব পালনে এগিয়ে যাবে সরকার

বাংলাদেশ সরকার

সরকারি দায়িত্ব পালনে কোনো বাধা এলে জনগণের সমর্থনে কার্যকর ব্যবস্থা নেবে সরকার, জানিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে পরিষদের বক্তব্য জাতীয় রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ছবিঃ ডেইলি ষ্টার

সরকারের অবস্থান পরিষ্কার করলো উপদেষ্টা পরিষদ

বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় বাংলাদেশ সরকারকে নানা রকম চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। বিরোধী দলগুলোর আন্দোলন, প্রশাসনিক কাজে বাধা প্রদান এবং নির্বাচন ঘিরে তৈরি হওয়া অনিশ্চয়তা—এই সবকিছুর মাঝেও উপদেষ্টা পরিষদের এক শক্ত বক্তব্য সরকারের অবস্থানকে আরও পরিষ্কার করে তুলেছে। পরিষদ জানায়, যদি সরকার তার সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে বাধাগ্রস্ত হয়, তবে তারা জনগণের পূর্ণ সমর্থন নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করবে না। এই বক্তব্য স্পষ্ট করে দেয়, সরকার দায়িত্ব পালনে আপস করবে না এবং গণভিত্তিক অবস্থানকে ব্যবহার করেই অগ্রসর হবে।

রাজনৈতিক সংকট ও সরকারের চ্যালেঞ্জ

বিগত কিছু সময় ধরে দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নানা জটিলতা তৈরি হয়েছে। সরকারকে “অবৈধ” আখ্যা দিয়ে একাংশের বিরোধিতা, আন্দোলনের নামে সড়কপথ অবরোধ, এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের হুমকি—এসব ঘটনায় প্রশাসনিক কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। উপদেষ্টা পরিষদ এই পরিস্থিতিকে গুরুত্বসহকারে বিশ্লেষণ করে বলেছে, সরকার দেশের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে কোনো রকম বিঘ্ন সহ্য করবে না। তারা মনে করেন, দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়া মানেই জনগণের স্বার্থে আঘাত করা, আর এ ধরনের কাজের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলাই হবে সরকারের কর্তব্য।

জনগণই সরকারের প্রকৃত শক্তি

উপদেষ্টা পরিষদের মতে, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রকৃত ক্ষমতার উৎস হলো জনগণ। সরকার জনকল্যাণে কাজ করছে বলেই সাধারণ মানুষ সরকারের পাশে রয়েছে। যদি সরকারকে বাইরে থেকে কেউ বাধা দেয়, তবে জনগণের সম্মিলিত সমর্থনই হবে সেই বাধার জবাব। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সরকার সমস্ত রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবে এবং যারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে, তাদের আইনানুগভাবে মোকাবিলা করা হবে। এ বক্তব্যের মাধ্যমে পরিষদ একদিকে জনগণের প্রতি আস্থা প্রকাশ করেছে, অপরদিকে বিরোধীদের প্রতি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে।

শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের প্রতি আহ্বান

পরিষদের বক্তব্যে উঠে এসেছে যে, সরকার সংলাপ ও সহাবস্থানে বিশ্বাসী। তারা চান, সব রাজনৈতিক দল এক টেবিলে বসে দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করুক। তবে যদি কোনো পক্ষ সংঘাতমূলক পথ বেছে নেয়, তাহলেও সরকার তার অবস্থান থেকে সরে আসবে না। বরং গণতন্ত্র, সংবিধান এবং আইনের শাসনের ভিত্তিতে কঠোর অবস্থান নেবে। দেশের উন্নয়ন, স্থিতিশীলতা এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্যই সরকার শান্তিপূর্ণ সমাধানে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।

রাজনৈতিক পরিস্থিতি

ছবিঃ বিসনেস সস্টান্ডের

প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে বাধার কুফল

উপদেষ্টা পরিষদ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে, যারা সরকারকে দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করছে, তারা মূলত দেশের অগ্রগতিকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। উন্নয়ন প্রকল্প স্থবির হয়ে পড়ছে, সাধারণ নাগরিক পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমে যাচ্ছে। এই অবস্থার পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে। তাই সরকার চায়, সবাই দায়িত্বশীল আচরণ করুক এবং প্রশাসনিক কাঠামোকে রাজনীতির বাইরে রাখুক।

২০২৫ সালের জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে দেশের রাজনৈতিক ময়দান উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বিরোধী দলগুলো নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। এই প্রেক্ষাপটে উপদেষ্টা পরিষদের এই বক্তব্য অনেক কিছু ইঙ্গিত বহন করে। তারা স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, নির্বাচন ঘিরে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বা বাধাদান সরকারের পক্ষ থেকে মেনে নেওয়া হবে না। জনগণের শক্তিতে ভর করেই সরকার নির্বাচন, উন্নয়ন ও প্রশাসনিক কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

সরকার গঠনের মূল ভিত্তি—জনগণ

পরিষদের মতে, জনগণই দেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতার উৎস। সরকার জনগণের প্রতিনিধি, তাদের বিশ্বাস আর ভোটেই সরকার গঠিত হয়েছে। কাজেই জনগণের স্বার্থেই সরকার সমস্ত বাধা অতিক্রম করে সামনে এগিয়ে যাবে। জনগণ সরকারের পাশে থাকলে, কোনো রাজনৈতিক শক্তি সরকারের দায়িত্ব পালনে বাধা দিতে পারবে না। একমাত্র শান্তি, গণতন্ত্র এবং সংবিধানই হবে সরকারের সিদ্ধান্তের ভিত্তি।

রাজনৈতিক সমঝোতার দিকে আহ্বান

আর্টিকেলটির শেষভাগে পরিষদ আবারও সব রাজনৈতিক দলকে সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়েছে। দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে সামনে রেখে তারা বলেছে, রাজনৈতিক মতভেদ থাকলেও তা সমাধান হতে পারে আলোচনার মাধ্যমে। সরকার বিরোধীদের দমন করতে নয়, বরং একসাথে পথ চলার সুযোগ করে দিতে চায়। তবে কোনো গোষ্ঠী যদি গঠনমূলক পথ ছেড়ে অরাজকতার দিকে হাঁটে, তাহলে জনগণের শক্তি ও আইনের কঠোরতা ব্যবহার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *