বন্যাকবলিতদের জন্য ৩০০টি ঘর হস্তান্তর করলেন প্রধান উপদেষ্টা

ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রামের বন্যাকবলিতদের পুনর্বাসনে ৩০০টি ঘর হস্তান্তর করলেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনুস। মানবিক এই উদ্যোগে সেনাবাহিনীও সহায়ক ভূমিকা রাখে।ছবি: ঢাকা ট্রিবিউন
বন্যার্তদের পাশে সরকারের মানবিক পদক্ষেপ
বাংলাদেশে প্রতিবছর বন্যা একটি নিয়মিত প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলেও, এবছরের প্রভাব ছিল তুলনামূলক বেশি। হাজার হাজার মানুষ তাদের ঘরবাড়ি হারিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়ে। সরকারের এই প্রকল্পটি সেইসব পরিবারের জন্য একটি আশার আলো হয়ে এসেছে, যারা সহায়-সম্বল হারিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছিল।
এই আবাসন প্রকল্পে প্রতিটি ঘর নির্মাণে আধুনিক মান বজায় রাখা হয়েছে। ঘরগুলিতে টিনের ছাউনি, পাকা মেঝে, টয়লেট ও রান্নাঘরসহ প্রয়োজনীয় সুবিধা রাখা হয়েছে, যাতে পরিবারগুলো নিরাপদ ও সম্মানজনক জীবনযাপন করতে পারে।
সেনাবাহিনীর দক্ষ বাস্তবায়ন
প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। তারা সুশৃঙ্খলভাবে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই ঘরগুলো নির্মাণ করে। সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে নির্মিত এই ঘরগুলোতে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে বাছাইকৃত পরিবারগুলোর মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। এই পদক্ষেপ সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার প্রতি অঙ্গীকারকে আরও দৃঢ় করে তোলে।
চাবি হস্তান্তরের আবেগঘন মুহূর্ত
অনুষ্ঠানে দেখা যায়, উপকারভোগীরা কাঁদো-কাঁদো চোখে নতুন ঘরের চাবি হাতে নিচ্ছেন। অনেকেই জানান, কয়েক মাস ধরে তাঁরা ত্রাণ ক্যাম্পে অবস্থান করছিলেন। এই ঘর তাঁদের জীবনে নতুন করে শুরু করার শক্তি দিচ্ছে।
একজন উপকারভোগী বলেন, “আমরা ভাবতেই পারিনি এত দ্রুত নতুন ঘর পাব। সরকার ও সেনাবাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞ। এখন থেকে আমরা আবার পরিবার নিয়ে শান্তিতে থাকতে পারব।”

ছবি: ঢাকা ট্রিবিউন
ভার্চুয়াল সংযোগে প্রধান উপদেষ্টার বার্তা
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনুস ঢাকায় অবস্থিত তার কার্যালয় থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে বলেন, “বিপর্যয়ের সময় মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমাদের দায়িত্ব। এই ঘর শুধু মাথা গোঁজার ঠাঁই নয়, এটি তাদের জীবনের পুনর্গঠনের সূচনা।”
তিনি আরও বলেন, “প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য আমাদের এই সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।”
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও সম্প্রসারণ
এই আবাসন প্রকল্পটি একটি পাইলট ধাপ হিসেবে শুরু হলেও, সরকার ভবিষ্যতে দেশের আরও দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় এটি সম্প্রসারিত করার পরিকল্পনা করছে। বর্তমানে যেসব পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ত্রাণ ক্যাম্পে অবস্থান করছে, তাদের পুনর্বাসনই সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার।
এই উদ্যোগের মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে যে, সমন্বিত পরিকল্পনা ও কার্যকর বাস্তবায়নের মাধ্যমে মানবিক বিপর্যয় থেকেও মানুষকে রক্ষা করা সম্ভব।
প্রধান উপদেষ্টা তার বক্তব্যে বলেন, “বন্যাকবলিতদের পুনর্বাসনে সরকার সর্বদা সচেষ্ট।” তিনি আরও জানান, ভবিষ্যতেও এই ধরনের মানবিক সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
সূত্র: ঢাকাট্রিবিউন (নির্ভরযোগ্য উৎস হিসেবে কৃতজ্ঞতা)