জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় চুক্তিতে সতর্কতা চাইলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় স্বার্থ বিঘ্নিত হতে পারে এমন যেকোনো আন্তর্জাতিক চুক্তি থেকে সরকারের বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। ছবি: Focus Bangla
জাতীয় স্বার্থ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, দেশের স্বার্থের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো আন্তর্জাতিক চুক্তি সরকারের করা উচিত নয়। বর্তমান সময়ে দেশ এক সংকটকাল অতিক্রম করছে এবং এমন সময়ে জাতীয় স্বার্থ বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা প্রবল।
তিনি মনে করেন, নির্বাচিত নয় এমন একটি সরকারের পক্ষে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করা অনৈতিক এবং তা ভবিষ্যতের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে। তার দাবি, এসব চুক্তির ক্ষেত্রে দেশের জনগণের মতামত গ্রহণ করা জরুরি।

ছবি: ঢাকা প্রকাশ
বৈদেশিক চুক্তিতে স্বচ্ছতা চাইলেন
ফখরুল বলেন, জনগণের কাছে জবাবদিহি না থাকা সরকারের দ্বারা গোপন চুক্তির ঝুঁকি বেশি থাকে। তিনি উদাহরণ টেনে বলেন, অতীতেও অনেকবার এমন হয়েছে যেখানে সরকারের সিদ্ধান্ত দেশের জন্য ক্ষতির কারণ হয়েছে।
তাঁর মতে, বর্তমান সরকার জাতীয় স্বার্থে নয়, বরং ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে চুক্তি করে চলেছে। এমন অবস্থায় জনগণের জানার অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে এবং বিদেশি শক্তিগুলোও দেশের ভেতরকার রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার সুযোগ নিচ্ছে।
জনগণের ওপর আস্থা রেখে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান
তিনি বলেন, “সত্যিকার অর্থে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা না হলে, জনগণের স্বার্থ কখনোই রক্ষা করা সম্ভব নয়।” মির্জা ফখরুল মনে করেন, এই সময়টি দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় সর্বস্তরের মানুষকে সজাগ থাকতে হবে।
তিনি বিভিন্ন পেশাজীবী, ছাত্রসমাজ এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের এই বিষয়ে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান। এই আন্দোলন কেবল একটি দলীয় আন্দোলন নয় বরং একটি জাতীয় দাবি হয়ে উঠেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বিদেশি চুক্তির ভবিষ্যৎ প্রভাব নিয়ে শঙ্কা
ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে যে আর্থিক, কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে, তাতে কোনো ভুল সিদ্ধান্ত দেশের ওপর দীর্ঘমেয়াদে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “জাতীয় স্বার্থে যা ক্ষতিকর, তা কখনোই মেনে নেওয়া যায় না।”
তিনি চায়না, ভারত বা পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে হওয়া চুক্তিগুলোতেও স্বচ্ছতা আনার দাবি তোলেন এবং বলেন, এগুলো ভবিষ্যতে পুনর্মূল্যায়নের প্রয়োজন হতে পারে।
রাজনৈতিক ঐকমত্যের প্রয়োজন
সবশেষে, তিনি বলেন যে জাতীয় স্বার্থরক্ষা ও আন্তর্জাতিক চুক্তির বিষয়ে একটি সর্বদলীয় রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রয়োজন। তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, যেন দেশের ভবিষ্যতের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে জাতীয় ঐক্য গঠনের উদ্যোগ নেয়।