এনআইডি তথ্য ফাঁসের অভিযোগ অস্বীকার করলো ব্র্যাক ব্যাংক

এনআইডি তথ্য ফাঁস

ব্র্যাক ব্যাংক এনআইডি তথ্য ফাঁসের সঙ্গে জড়িত নয় বলে জানিয়েছে। প্রযুক্তি অবকাঠামো শতভাগ সুরক্ষিত বলেও দাবী ব্যাংকটির। ইসি সাময়িকভাবে এনআইডি যাচাই সেবা বন্ধ করলেও ব্যাংকটি জানিয়েছে তারা তদন্তে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করছে। ছবি: ডেইলি ষ্টার

অভিযোগের সূত্রপাত ও তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া

বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সম্পর্কিত একটি তথ্য ফাঁসের অভিযোগকে কেন্দ্র করে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সাময়িকভাবে দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠান ব্র্যাক ব্যাংকের এনআইডি যাচাইকরণ সেবা বন্ধ করে দিয়েছে। ইসির এই সিদ্ধান্তের পরপরই ব্যাংকটির বিরুদ্ধে সম্ভাব্য তথ্য ফাঁসের অভিযোগ নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দেয়। তবে ব্র্যাক ব্যাংক দ্রুত ও সরাসরি প্রতিক্রিয়া জানিয়ে এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন আখ্যা দেয়। তারা স্পষ্ট করে জানায়, তাদের কোনো সার্ভার বা প্রযুক্তি প্ল্যাটফর্ম থেকে কোনো ধরণের তথ্য ফাঁস ঘটেনি।

প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা ও অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থা

ব্র্যাক ব্যাংকের পক্ষ থেকে একটি অফিসিয়াল বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, তারা তথ্য প্রযুক্তি নিরাপত্তা রক্ষায় সর্বোচ্চ স্তরের ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে। প্রতিটি লেনদেন, তথ্য যাচাই, এবং তথ্য সংরক্ষণ প্রক্রিয়া আন্তর্জাতিক মান অনুসরণ করে পরিচালিত হয়। ব্যাংকটির মতে, তাদের সাইবার নিরাপত্তা দল ২৪ ঘণ্টা নজরদারিতে থাকে এবং এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের নিরাপত্তা ভঙ্গ বা অননুমোদিত প্রবেশের ঘটনা ঘটেনি। ব্যাংকটি আরও জানিয়েছে, তারা একটি স্বাধীন আইটি অডিট টিম নিয়োগ করেছে যারা বিষয়টি যাচাই করছে এবং প্রয়োজনে ইসিকে রিপোর্ট দেবে।

তদন্তে সহযোগিতা ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ভূমিকা

ইসির পক্ষ থেকে সেবা সাময়িক বন্ধ করার সিদ্ধান্তের পর, ব্র্যাক ব্যাংক নিজ উদ্যোগে তদন্ত শুরু করে। ব্যাংকটি জানায়, তারা সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর সঙ্গে পূর্ণ সহযোগিতা করছে। তাদের অভ্যন্তরীণ তদন্ত ইউনিট ইতোমধ্যেই এনআইডি সংক্রান্ত সব কার্যক্রম রিভিউ করেছে এবং কোথাও কোনো গাফিলতি বা ফাঁসের প্রমাণ পায়নি। ব্র্যাক ব্যাংক এটিও নিশ্চিত করেছে যে, যদি কেউ তথ্য ফাঁসে জড়িত থাকে এবং তা প্রমাণিত হয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সেবা পুনরায় চালু এবং গ্রাহক স্বার্থ

ব্র্যাক ব্যাংক আশা প্রকাশ করেছে যে, শীঘ্রই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে এবং নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এনআইডি যাচাই সেবা পুনরায় চালু করা যাবে। তারা জানিয়েছে যে, গ্রাহকদের যাতে কোনো ভোগান্তি না হয় সে লক্ষ্যে বিকল্প পদ্ধতিতে সেবা প্রদান অব্যাহত রয়েছে। ব্যাংকটি গ্রাহকদের আশ্বস্ত করেছে যে, তাদের ব্যক্তিগত তথ্য সম্পূর্ণরূপে নিরাপদ এবং এই ঘটনায় আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। ব্যাংকটি তাদের প্রযুক্তি দলকে আরও শক্তিশালী করছে যাতে ভবিষ্যতে এ ধরণের অভিযোগের মুখোমুখি না হতে হয়।

নির্বাচন কমিশন

ছবি: বিসনেস স্টান্ডের

জনমত ও বিশ্লেষকদের মতামত

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষ ও বিশ্লেষকদের মধ্যে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ মনে করছেন, ইসির তড়িঘড়ি করে নেওয়া পদক্ষেপ যথাযথ ছিল না এবং এর ফলে একটি নির্ভরযোগ্য ব্যাংকের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। আবার অনেকে এটিকে সরকারের সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতি বলেও দেখছেন। তবে বেশিরভাগই মনে করছেন, দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসা জরুরি এবং কোনো প্রতিষ্ঠানকে আগেই দোষী সাব্যস্ত করা অনুচিত।

ব্র্যাক ব্যাংক আশা প্রকাশ করেছে যে, শীঘ্রই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে এবং নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এনআইডি যাচাই সেবা পুনরায় চালু করা যাবে। তারা জানিয়েছে যে, গ্রাহকদের যাতে কোনো ভোগান্তি না হয় সে লক্ষ্যে বিকল্প পদ্ধতিতে সেবা প্রদান অব্যাহত রয়েছে। ব্যাংকটি গ্রাহকদের আশ্বস্ত করেছে যে, তাদের ব্যক্তিগত তথ্য সম্পূর্ণরূপে নিরাপদ এবং এই ঘটনায় আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। ব্যাংকটি তাদের প্রযুক্তি দলকে আরও শক্তিশালী করছে যাতে ভবিষ্যতে এ ধরণের অভিযোগের মুখোমুখি না হতে হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *