জামায়াত আমিরের প্রস্তাব: প্রধান উপদেষ্টাকে অল পার্টি বৈঠক ডাকার আহ্বান

দেশে চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে অল পার্টি বৈঠকের প্রস্তাব দিয়েছেন জামায়াত ইসলামীর আমির। জাতীয় ঐক্য গঠনে এই বৈঠকের তাৎপর্য বিশ্লেষণ। ছবি: প্রথম আলো
রাজনৈতিক উত্তাপের মাঝেই জামায়াত আমিরের গুরুত্বপূর্ণ বার্তা
বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এক জটিল ও স্পর্শকাতর সময় পার করছে। এই সংকটকালীন মুহূর্তে জামায়াত ইসলামীর আমির এক দায়িত্বশীল ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষাৎ করেছেন। সেখানে তিনি জাতীয় স্বার্থে, বিশেষত চলমান রাজনৈতিক অচলাবস্থার নিরসনে একটি ‘অল পার্টি বৈঠক’ আহ্বানের দাবি জানান। তার মতে, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে একমাত্র গঠনমূলক সংলাপই পারে জাতিকে স্থিতিশীলতার পথে ফিরিয়ে আনতে। এই বার্তা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
চলমান সংকটে ‘অল পার্টি বৈঠক’ এর প্রয়োজনীয়তা
বর্তমানে দেশজুড়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা, পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি জাতিকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। এমন পরিস্থিতিতে একপাক্ষিক সিদ্ধান্ত বা শক্তি প্রদর্শন কোনো স্থায়ী সমাধান দিতে পারে না। জামায়াত আমির জোর দিয়ে বলেন, “সমস্যার সমাধান রাজপথে নয় আর আলোচনার টেবিলে খোঁজ করতে হবে।” অল পার্টি বৈঠক এমন একটি প্ল্যাটফর্ম হতে পারে যেখানে সরকারি ও বিরোধী দলসহ সকল রাজনৈতিক শক্তি নিজেদের মতামত তুলে ধরতে পারবে এবং একটি গ্রহণযোগ্য সমাধানে পৌঁছাতে পারবে।
প্রধান উপদেষ্টার নিরপেক্ষ ভূমিকার ওপর গুরুত্ব
সাক্ষাতে জামায়াত আমির স্পষ্ট করে বলেন, প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব হলো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার পরিবেশ তৈরি করা। তিনি বলেন, “আপনি এমন একজন অবস্থানে আছেন, যেখান থেকে সমস্ত রাজনৈতিক শক্তিকে আহ্বান জানিয়ে একটি নিরপেক্ষ ও কার্যকর সংলাপের আয়োজন সম্ভব এবং তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, প্রধান উপদেষ্টা নিজ অবস্থান থেকে দলীয় বিভাজনের ঊর্ধ্বে উঠে একটি জাতীয় সংলাপের প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলবেন এবং যা ভবিষ্যতের শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবেশ নিশ্চিত করবে।
সর্বদলীয় অংশগ্রহণ ছাড়া কোনো সমাধান সম্ভব নয়
জামায়াত আমির দৃঢ়ভাবে বলেন, কোনো দল বা মত বাদ দিয়ে আলোচনার আয়োজন হলে তা ফলপ্রসূ হবে না বরং বিভাজন আরও গভীর হবে। তিনি বলেন, “একটি প্রকৃত অল পার্টি বৈঠক মানে হচ্ছে, সেখানে সকল রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি থাকবে, হোক সে বড় দল বা ছোট দল, ক্ষমতাসীন হোক কিংবা বিরোধী।” তার প্রস্তাব ছিল – সংলাপে শুধু রাজনৈতিক দল নয়, বরং পেশাজীবী সংগঠন, সুশীল সমাজ, এবং নাগরিক প্রতিনিধিদেরও অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। তবেই একটি সমন্বিত রোডম্যাপ তৈরির মাধ্যমে দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।