সৌদি আরবে ৬ জুন উদযাপিত হবে ঈদুল আজহা

সৌদি আরব ঘোষণা করেছে যে ৬ জুন ২০২৫ তারিখে দেশজুড়ে উদযাপিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা। হিজরি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ায় নির্ধারিত হয়েছে ঈদের দিন। ছবিঃ সংগ্রহ

জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ার পরই ঈদের তারিখ নির্ধারিত

সৌদি আরবের ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় ঘোষণা করেছে যে, দেশজুড়ে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে আগামী ৬ জুন ২০২৫ তারিখে। রবিবার সন্ধ্যায় জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ার ফলে হিজরি ১০ জিলহজ হিসেব করে এই দিনটিকে ঈদের দিন হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। সৌদি আরবে চাঁদ দেখার ওপর ভিত্তি করেই ঈদ ও হজের তারিখ নির্ধারণ করা হয়, যা বিশ্বের অন্যান্য মুসলিম দেশগুলোর জন্যও দিকনির্দেশনা হিসেবে বিবেচিত।

ধর্মীয় গুরুত্ব ও কোরবানির ঐতিহ্য

ঈদুল আজহা মুসলিম সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব, যা হযরত ইব্রাহিম (আঃ)-এর আল্লাহর প্রতি আনুগত্য ও কোরবানির চেতনা স্মরণ করে পালন করা হয়। এই দিনে মুসলিমরা পশু কোরবানি করে আল্লাহর নৈকট্য লাভের চেষ্টা করেন এবং দরিদ্রদের মাঝে মাংস বিতরণ করেন। সৌদি আরবসহ গোটা মুসলিম বিশ্বে এই উৎসব একটি পবিত্র ও গভীর ধর্মীয় আবেগে উদযাপন করা হয়।ঈদুল আজহার পূর্বের দিন অর্থাৎ ৯ জিলহজ আরাফাহ দিবস, যেদিন হজ পালনকারীরা আরাফাত ময়দানে সমবেত হন। এটি হজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ৬ জুন ঈদ হওয়ায় ৫ জুন আরাফাহ দিবস পালিত হবে। সারা বিশ্বের মুসলিমদের কাছে এই দুই দিন অত্যন্ত পবিত্র ও মাহাত্ম্যপূর্ণ, বিশেষত যারা হজ পালন করছেন তাদের জন্য ঈদের এই তারিখ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

সৌদি আরবের সরকারি প্রস্তুতি

ঈদুল আজহা উপলক্ষে সৌদি আরব ইতিমধ্যেই দেশব্যাপী প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। বিশেষ করে মক্কা ও মদিনায় ব্যাপক নিরাপত্তা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং ধর্মীয় সেবার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। হজ পালনের জন্য আগত মিলিয়ন মিলিয়ন হাজীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী ও স্বাস্থ্য কর্মীদের মোতায়েন করা হয়েছে। দেশটির বিভিন্ন শহরে কোরবানির পশু বাজারগুলোও সরকারের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে।

বৈশ্বিক মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়া

সৌদি আরবের ঈদের ঘোষণা মুসলিম বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে উৎসাহ ছড়িয়ে দিয়েছে। অনেক দেশ সৌদির সিদ্ধান্ত অনুসরণ করে ঈদের তারিখ নির্ধারণ করে থাকে। এই ঘোষণা অনুযায়ী দক্ষিণ এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকার মুসলিমরাও ঈদ উদযাপনের প্রস্তুতি শুরু করেছেন। কোরবানির পশু কেনা, ঈদের জামাতের আয়োজন ও পরিবার-পরিজনের সঙ্গে সময় কাটানোর প্রস্তুতি এখন তুঙ্গে।

করোনা-পরবর্তী সময়ে ঈদের প্রস্তুতিতে ভিন্ন মাত্রা

করোনা মহামারির পর থেকে এবারই প্রথম সৌদি আরব ঈদুল আজহা উদযাপন করতে যাচ্ছে পূর্ণ প্রস্তুতি ও সীমাহীন জনসমাগমের মাধ্যমে। হজ ও ঈদ উৎসব ঘিরে পুনরায় আগের মতো ধর্মীয় পরিবেশ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে সৌদি সরকার। এবার স্বাস্থ্যবিধির কড়াকড়ি না থাকায় মুসল্লিদের মাঝে উদ্দীপনার মাত্রাও অনেক বেশি।বর্তমান প্রযুক্তি নির্ভর যুগে মুসলিমরা বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকেই সৌদি আরবের ঈদ উদযাপন সরাসরি দেখতে পারছেন। হজের লাইভ সম্প্রচার, ঈদের নামাজ ও খুতবা অনলাইনে দেখার সুযোগ বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায়কে একসূত্রে যুক্ত করেছে। অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মেসেজিং অ্যাপে ঈদের শুভেচ্ছা বার্তা পাঠাচ্ছেন এবং কোরবানির ছবি ও ভিডিও শেয়ার করছেন।