তরুণ প্রতিভা ইয়ামাল ও মাস্তান্তুয়োনোর বিকাশে সময় ও স্বাধীনতা দরকার

ফরাসি কিংবদন্তি ডেভিড ত্রেজেগে মন্তব্য করেছেন যে, তরুণ ফুটবল তারকা ইয়ামাল ও মাস্তান্তুয়োনোর বিকাশে তাদের চাপমুক্ত পরিবেশে সময় ও সুযোগ দেওয়া জরুরি। ছবিঃ রয়টার্স
তরুণদের উত্থান ফুটবল জগতে আলোচনার কেন্দ্রে
বর্তমান সময়ে ফুটবল জগতে তরুণ প্রতিভাদের উত্থান বিশেষভাবে নজর কেড়েছে। বিশ্বজুড়ে ফুটবলের প্রধান ক্লাবগুলো তরুণ প্রতিভাদের খুঁজে এনে বড় মঞ্চে নিয়ে আসছে। এর মধ্যে লামিন ইয়ামাল এবং ক্লাউদিও মাস্তান্তুয়োনোর নাম আলাদা ভাবে উঠে এসেছে। মাত্র ১৬ বছর বয়সেই ইয়ামাল স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনার মূল দলে সুযোগ পেয়েছেন এবং অসাধারণ পারফরম্যান্স দিয়ে সকলের মনোযোগ আকর্ষণ করেছেন। অন্যদিকে আর্জেন্টিনার ক্লাউদিও মাস্তান্তুয়োনো তারকা মিডফিল্ডার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার পথে রয়েছেন। এই দুই তরুণ খেলোয়াড়ের উত্থান ফুটবল বিশ্লেষক এবং ভক্তদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তবে এই তরুণ প্রতিভাদের যথাযথ বিকাশের জন্য কী ধরনের পরিবেশ এবং সময় দরকার, সেটাই এখন আলোচনার মূল বিষয়। এই প্রসঙ্গে ফরাসি ফুটবল কিংবদন্তি ডেভিড ত্রেজেগে একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করেছেন, যা ফুটবল কমিউনিটিতে যথেষ্ট গুরুত্ব পাচ্ছে।
চাপ নয়, চাই নিরবিচারে বিকাশের সুযোগ
ত্রেজেগে সম্প্রতি এক সংবাদ সাক্ষাৎকারে বলেন, “তরুণ খেলোয়াড়দের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন এমন একটি পরিবেশ যেখানে তারা নিজেকে চাপমুক্ত অনুভব করতে পারে। মিডিয়া, সমর্থক এবং ফ্যানদের উচ্চ প্রত্যাশা তরুণদের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে, যা তাদের প্রাকৃতিক বিকাশে বড় বাধা হতে পারে।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, “খেলোয়াড়দের প্রতিটি ভুল এবং সফলতাই তাদের শেখার প্রক্রিয়ার গুরুত্বপূর্ণ অংশ, তাই তাদের উপর এক ধরনের স্বাধীনতা থাকা উচিত, যাতে তারা মুক্তভাবে নিজেদের খুঁজে পেতে পারে।” ত্রেজেগের মতে, এই দুই তরুণ তারকার সামনে যে বিশাল প্রত্যাশা রয়েছে, তা তাদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে, যদি তাদের যথাযথ সময় এবং স্বাধীনতা না দেওয়া হয়। তিনি সতর্ক করেছেন যে, এই চাপের ফলে খেলোয়াড়রা কখনো কখনো তাদের সেরাটা দিতে অক্ষম হয়ে পড়েন, যা তাদের ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
অতীত অভিজ্ঞতা থেকেই ত্রেজেগের সতর্কবার্তা
ত্রেজেগে নিজেও ফুটবলের বিশ্বমঞ্চে অনেক বড় বড় অর্জন করেছেন। তিনি ১৯৯৮ সালের ফিফা বিশ্বকাপের ফাইনালে ফ্রান্সের জন্য গুরুত্বপূর্ণ গোল করেছেন এবং বিশ্বকাপজয়ী দলের এক প্রধান খেলোয়াড় ছিলেন। সেই সময় তার নিজস্ব ক্যারিয়ারেও অনেক চ্যালেঞ্জ ছিল। তিনি বলেছেন, “আমার তরুণ বয়সে যখন আমি ফুটবল খেলছিলাম, তখন আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে অতিরিক্ত চাপ কতটা ক্ষতিকর হতে পারে। কোচিং স্টাফ ও ক্লাব কর্তৃপক্ষের সঠিক সমর্থন ও দিকনির্দেশনা ছাড়া আমি হয়তো অনেক কম সফল হতাম।” ত্রেজেগে সতর্ক করে বলেছেন, তরুণ খেলোয়াড়দের প্রতি কোচ ও ক্লাব কর্তৃপক্ষের যত্নবান হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তারা যেন সঠিক সময়ে সঠিক পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দিতে পারে এবং চাপ থেকে মুক্ত রাখতে পারে, যাতে তরুণরা নিজেদের দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তুলতে পারে।