সংস্কারের নামে নির্বাচন বিলম্ব করছে অন্তর্বর্তী সরকার:

বাংলাদেশ নির্বাচন

বিএনপির নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ অভিযোগ করেছেন যে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংস্কারের অজুহাতে জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত করছে। তিনি বলেন, এটি জনগণের ভোটাধিকার হরণের চক্রান্ত। ছবিঃ প্রথমআলো

সংস্কারের নামে নির্বাচন পেছানোর অভিযোগ তুললেন সালাহউদ্দিন

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সিনিয়র নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ সম্প্রতি একটি সংবাদ সম্মেলনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেন, “সংস্কারের নামে একটি পরিকল্পিতভাবে নির্বাচন বিলম্বিত করা হচ্ছে, যার মূল উদ্দেশ্য হলো ক্ষমতায় থাকার সময় বাড়ানো।” তার মতে, এটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে এক গভীর ষড়যন্ত্র এবং জনগণের অধিকার হরণের একটি সুপরিকল্পিত পদক্ষেপ। তিনি মনে করেন, নির্বাচন সময়মতো না হলে তা রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার সৃষ্টি করবে।

জনগণের ভোটাধিকার হরণের ষড়যন্ত্র চলছে

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের জনগণ আজ ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়ার দ্বারপ্রান্তে। তিনি অভিযোগ করেন, সরকার এবং তাদের সহযোগী মহল সংস্কারকে একটি ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে নির্বাচন প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত করছে, যাতে তারা অধিক সময় ধরে ক্ষমতায় থাকতে পারে। তার মতে, এই ধরনের পদক্ষেপ সরাসরি সংবিধান পরিপন্থী এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতি অসম্মানজনক। তিনি হুঁশিয়ারি দেন, বিএনপি ও জনগণ মিলে এমন ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে।

সংস্কার না, উদ্দেশ্য ক্ষমতা সংরক্ষণ

বিএনপির এই নেতা বলেন, “যে সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে, তা প্রকৃতপক্ষে কোনো ইতিবাচক পরিবর্তনের লক্ষ্যে নয়। এটি একটি সুপরিকল্পিত পরিকল্পনা, যার মাধ্যমে বর্তমান প্রশাসন নির্বাচন বিলম্ব করে নিজের অবস্থান শক্তিশালী করতে চাইছে।” তিনি আরও দাবি করেন, অতীতে এই ধরনের সংস্কারের নাম করে একাধিকবার ক্ষমতা কুক্ষিগত করার চেষ্টা হয়েছে এবং বর্তমান পরিস্থিতিও সেই ধারাবাহিকতারই অংশ।

সালাহউদ্দিন আহমেদ জোর দিয়ে বলেন, বিএনপি সবসময়ই একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পক্ষে। তিনি বলেন, “আমরা চাই একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হোক, যেখানে জনগণের প্রকৃত মতামত প্রতিফলিত হবে। কিন্তু বর্তমান সরকার নির্বাচনকে বিলম্বিত করে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে।” তার মতে, সময়মতো নির্বাচন আয়োজন করাই এখন দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের একমাত্র উপায়।

নির্বাচন কমিশনের নিরবতা নিয়েও প্রশ্ন

এ সময় সালাহউদ্দিন নির্বাচন কমিশনের ভূমিকাকেও প্রশ্নবিদ্ধ বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “কমিশন এখন পর্যন্ত নিরপেক্ষতার প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হয়েছে। তারা সরকারের ইঙ্গিতে কাজ করছে বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস।” তার দাবি, কমিশনের নিরবতা এবং নির্বিকার আচরণ এই বিলম্বের অংশ। সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের জন্য একটি নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি বলেন, “বর্তমান কাঠামোতে সঠিক নির্বাচন অসম্ভব।”

সালাহউদ্দিন আহমেদ আরও সতর্ক করেন যে, নির্বাচন বিলম্বের ফলে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সামাজিক উত্তেজনা বাড়ছে। তিনি বলেন, “যখন জনগণ বিশ্বাস হারিয়ে ফেলে যে তারা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তাদের নেতা নির্বাচন করতে পারবে না, তখন স্বাভাবিকভাবেই সমাজে হতাশা ও ক্ষোভ বাড়ে।” এই পরিস্থিতি ভবিষ্যতে বড় ধরনের সহিংসতা বা অরাজকতার জন্ম দিতে পারে বলেও তিনি সতর্ক করেন। সরকারের প্রতি তিনি আহ্বান জানান, দেরি না করে অবিলম্বে নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণা করা হোক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *