বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগণের সহায়তায় জাপানের মানবিক সহায়তা

বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগণের সহায়তায় জাপানের ৩.৫ মিলিয়ন ডলারের অনুদান

ছবি : ঢাকা ট্রিবিউনে

রোহিঙ্গা সংকটের পটভূমি ও আন্তর্জাতিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তা

বাংলাদেশে ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা সংকট শুরু হওয়ার পর থেকে কক্সবাজার ও ভাসানচরে লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী মানবেতর জীবন যাপন করছে। একই সাথে, আশ্রয়দানকারী স্থানীয় জনগোষ্ঠীর ওপরও ব্যাপক চাপ পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সহায়তা ছিল অত্যন্ত জরুরি, এবং এই ধারাবাহিকতায় জাপান সরকারের ভূমিকা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। দীর্ঘদিন ধরেই জাপান বিভিন্ন মানবিক ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশের পাশে রয়েছে, যা এই সংকটময় সময়ে আরও প্রাঞ্জল হয়ে উঠেছে।

জাপানের ৩.৫ মিলিয়ন ডলার অনুদানের ঘোষণা ও উদ্দেশ্য

২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে, জাপান সরকার আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (IOM)-এর মাধ্যমে ৩.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুদান প্রদান করে। ঢাকায় অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠানে জাপানের রাষ্ট্রদূত সাইডা শিনিচি এবং IOM বাংলাদেশের মিশন প্রধান ল্যান্স বোনো আনুষ্ঠানিকভাবে এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এই অনুদান রোহিঙ্গা শরণার্থী ও স্থানীয় জনগণের জীবনমান উন্নয়নে সরাসরি ব্যবহার করা হবে। বিশেষ করে ক্যাম্প ব্যবস্থাপনা, সুরক্ষা সেবা, জরুরি আশ্রয়, এলপিজি সরবরাহ এবং পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়নে এই অর্থ ব্যয় করা হবে।

সহায়তার সম্ভাব্য প্রভাব ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

এই মানবিক সহায়তা শুধু তাৎক্ষণিক সংকট মোকাবিলার জন্য নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদী পুনর্বাসন ও উন্নয়ন কর্মসূচির জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। রাষ্ট্রদূত শিনিচি উল্লেখ করেছেন, জাপান ভবিষ্যতেও বাংলাদেশ সরকারের ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করে রোহিঙ্গা সমস্যার টেকসই সমাধানে ভূমিকা রাখতে চায়। অন্যদিকে, IOM মিশন প্রধান ল্যান্স বোনো এই অনুদানকে সংকট নিরসনে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান হিসেবে আখ্যা দেন এবং জানান, এটি ক্যাম্প ও স্থানীয় পর্যায়ে সেবা কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করবে।

মানবিক বন্ধুত্বের নতুন দিগন্ত

রোহিঙ্গা ও স্থানীয় সম্প্রদায়ের জীবনমান উন্নয়নে জাপানের এধরনের অব্যাহত সহায়তা বাংলাদেশের জন্য একটি বড় প্রাপ্তি। আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব ও সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে রোহিঙ্গা সংকটের দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের পথ সুগম হতে পারে। মানবতার এই যাত্রায় জাপান ও বাংলাদেশের বন্ধুত্বের সম্পর্ক আরো দৃঢ় হলো, যা ভবিষ্যতেও নানাবিধ উন্নয়নমূলক সহযোগিতার ক্ষেত্র তৈরি করবে।

Observer Online Report

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *