সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে উলামা-মাশায়েখদের মহাসমাবেশে ৯ দফা দাবি উত্থাপন

ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে উলামা-মাশায়েখদের মহাসমাবেশে ৯ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা এবং কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা। ছবি: টিবিএস
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে উলামা-মাশায়েখদের মহাসমাবেশে ৯ দফা দাবি উত্থাপন
গত ৫ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ঢাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে উলামা-মাশায়েখ বাংলাদেশ আয়োজিত এক মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত চলা এই সমাবেশে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত হাজার হাজার আলেম-ওলামা ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা অংশগ্রহণ করেন।
উত্থাপিত ৯ দফা দাবি:
১. ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা: সাধারণ শিক্ষাব্যবস্থায় সকল স্তরে ধর্মীয় শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করা।
২. কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা: বাংলাদেশে কাদিয়ানিদের (আহমদিয়া সম্প্রদায়) সরকারিভাবে অমুসলিম হিসেবে ঘোষণা করা।
৩. ২০১৩ সালের শাপলা চত্বর ঘটনার বিচার: ২০১৩ সালের শাপলা চত্বরের ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করা।
৪. মিথ্যা মামলার প্রত্যাহার: পূর্ববর্তী সরকারের আমলে আলেম-ওলামাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার।
৫. ২০১৮ সালের টঙ্গী ইজতেমা হামলার বিচার: ২০১৮ সালে টঙ্গী ইজতেমায় ছাত্রদের ওপর হামলার বিচার ও দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করা।
৬. সাদ কান্ধলভীর বাংলাদেশে প্রবেশ নিষিদ্ধ: স্বঘোষিত তাবলিগ আমির সাদ কান্ধলভীর বাংলাদেশে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা।
৭. কাকরাইল মসজিদ ও ইজতেমা ময়দানে সাদপন্থীদের নিষিদ্ধ: কাকরাইল মসজিদ ও টঙ্গী ইজতেমা ময়দানে সাদপন্থীদের প্রবেশ ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।
৮. তাবলিগ জামাতের ঐক্য রক্ষা: তাবলিগ জামাতের ঐক্য রক্ষা ও বিভাজন প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ।
৯. কাকরাইল মসজিদ ও ইজতেমা ময়দানে উলামায়ে কেরামের তত্ত্বাবধান: কাকরাইল মসজিদ ও টঙ্গী ইজতেমা ময়দানে উলামায়ে কেরামের তত্ত্বাবধানে সকল কার্যক্রম পরিচালনা।

ছবি: বিসনেস স্টান্ডের
সমাবেশের উল্লেখযোগ্য বক্তারা:
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন হাটহাজারীর খলিল আহমদ কাসেমী, মধুপুরের পীর সাহেব আল্লামা আব্দুল হামিদ, আল্লামা আব্দুর রহমান হাফেজ্জী, আল্লামা নূরুল ইসলাম, মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুক, মাওলানা রশিদুর রহমান, আল্লামা শেখ জিয়াউদ্দিন, আল্লামা শেখ সাজিদুর রহমান, আল্লামা আব্দুল কুদ্দুস ফারিদাবাদী, আল্লামা নূরুল ইসলাম ওলিপুরী, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা আবু তাহের নদভী, মাওলানা আরশাদ রহমানী, মাওলানা সালাহউদ্দিন নানুপুরী, মাওলানা মুশতাক আহমদ, প্রিন্সিপাল মিজানুর রহমান চৌধুরী, মাওলানা আনোয়ারুল করিম এবং মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ আলী।
সমাবেশের প্রভাব:
সমাবেশের কারণে রাজধানীর শাহবাগ, ফার্মগেট, বিজয় সরণি, মগবাজার, সাতরাস্তা, কাকরাইলসহ বিভিন্ন এলাকায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। অনেক মানুষ পায়ে হেঁটে সমাবেশস্থলে পৌঁছান। পুলিশ ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
সমাবেশ শেষে দোয়া পরিচালনা করেন শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী। সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠান শেষ করেন।